কম্পিউটার হল একটি ইলেকট্রনিক গণনাকারী যন্ত্র। যা তথ্য গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন করে।
কম্পিউটার |
ব্যবহারকারী কোন ডেটা বা উপাত্ত কম্পিউটারে সরবরাহ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কম্পিউটার তা প্রক্রিয়াকরণ বা প্রসেসিং করে কাজের ফলাফল প্রদান করে।
কম্পিউটার মানে কি?
Computer শব্দটির সাধারণ অর্থ হল গণক যন্ত্র। যা ল্যাটিন শব্দ Compute থেকে ইংরেজী Computer শব্দের উৎপত্তি হয়েছে।
কম্পিউটার শব্দের অর্থ কি?
কম্পিউটার (Computer) শব্দটি এসেছে গ্রিক "কম্পিউট" (compute) শব্দ থেকে। আর Compute শব্দের অর্থ হিসাব বা গণনা করা। অতএব কম্পিউটার (Computer) শব্দের অর্থ হল গণনাকারী যন্ত্র। মোটকথা Computer শব্দটির অর্থ হল গণনা বা হিসাব নিকাশ করা।
কম্পিউটার কত প্রকার?
গঠন ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কম্পিউটার ৩ প্রকারঃ
- এনালগ কম্পিউটার
- ডিজিটাল কম্পিউটার
- হাইব্রিড কম্পিউটার
এনালগ কম্পিউটার কি?
এনালগ কম্পিউটার (Analog Computer) হল এমন এক ধরণের কম্পিউটার। যা ইলেকট্রিক, যান্ত্রিক, বা হাইড্রলিকের ভৌত এবং চলমান পরিমাপ মডেল হিসেবে রূপ দেয়। এনালগ কম্পিউটার হল এমন একটি কম্পিউটার। যা সংখ্যার সাথে পরিচালনা করে।
যা সরাসরি পরিমাপযোগ্য পরিমাণে প্রতিনিধিত্ব করে বা তুলনা করে। যেমনঃ ভোল্টেজ বা ঘূর্ণন ইত্যাদি। এনালগ কম্পিউটারের উদাহরণ হিসাবে বলা যায় গাড়ির মধ্যে থাকা স্পিড মিটার, ফুয়েল মিটার, টেম্পারেচার মিটার ইত্যাদি।
ডিজিটাল কম্পিউটার কি?
বর্তমান সময়ে সকল কম্পিউটার ডিজিটাল কম্পিউটারের অন্তর্ভুক্ত। ডিজিটাল কম্পিউটার বাইনারি সংখ্যা বৈদ্যুতিক ভোল্টেজের উপস্থিতিকে ১ এবং অনুপস্থিতিকে ০ দ্বারা প্রকাশ করার মাধ্যমে এটি সকল কার্যক্রম সম্পাদান করে থাকে।
একসময় ডিজিটাল কম্পিউটার শুধু যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগের কাজ করলেও বর্তমানে এটি অনেক জটিল তথ্য বা উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের কাজ করতে পারে। নিচে ডিজিটাল কম্পিউটারের প্রকারভেদ আলোচনা করা হলঃ
হাইব্রিড কম্পিউটার কি?
হাইব্রিড কম্পিউটার হল এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ এক ধরনের কম্পিউটার। বৈজ্ঞানিক গবেষণা কাজের জন্য হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। আর এই কম্পিউটারে এনালগ পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করে তার ফলাফল ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রদর্শন করে থাকে।
আবহাওয়া অফিস হাইব্রিড কম্পিউটারের সাহায্যে অ্যানালগ পদ্ধতিতে তাপমাত্রা ও বায়ুচাপ ইত্যাদি তথ্য পরিমাপ করে পরে তা ডিজিটাল পদ্ধতিতে গণনা করে আবহাওয়ার সংবাদ প্রচার করে।
ডিজিটাল কম্পিউটার কত প্রকার?
আকার, আয়তন ও ব্যহারের ভিত্তিতে ডিজিটাল কম্পিউটারের শ্রেণীবিভাগ রয়েছে। ডিজিটাল কম্পিউটার ৪ প্রকার যথাঃ
- সুপার কম্পিউটার
- মেইনফ্রেম কম্পিউটার
- মিনি কম্পিউটার
- মাইক্রো কম্পিউটার
সুপার কম্পিউটার কি?
সবচেয়ে শক্তিশালী ও দ্রুতগতি সম্পন্ন কম্পিউটার হল সুপার কম্পিউটার। এই কম্পিউটারের অনেক জটিল ও সূক্ষ্ম কাজ করার সক্ষমতা রয়েছে। আকার, আকৃতি ও ক্ষমতার দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় কম্পিউটার হল সুপার কম্পিউটার।
মহাকাশ ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, নভোযান, জঙ্গি বিমান এবং ক্ষেপনাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। কয়েকটি সুপার কম্পিউটারের উদাহরণ হলঃ NEBULAE, ROADRUNNER, KRAKEN, JUGENE, PLEIADES, TIANHE-1, Sunway Taihulight, CRAY 1, supers xll, JAGUAR, ইত্যাদি।
মেইনফ্রেম কম্পিউটার কি?
সুপার কম্পিউটার থেকে তুলনামূলক কম শক্তিশালী কম্পিউটার হল মেইনফ্রেম কম্পিউটার। তবে সাধারণ কম্পিউটার থেকে মেইনফ্রেম কম্পিউটার অনেক শক্তিশালী ও আকারে বড়। এই কম্পিউটার বাণিজ্যিক কাজে বেশী ব্যবহার করা হয়।
ব্যাংক, বীমা ও বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে তথ্য আদান প্রদান, সংরক্ষণ এবং গবেষণা কাজে মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে ব্যবহৃত মেইনফ্রেম কম্পিউটার হল IBM 9100, IBM 370 and IBM 4341 ইত্যাদি।
মিনি কম্পিউটার কি?
সাধারণ কম্পিউটারের চেয়ে মিনি কম্পিউটার আকারে ছোট হয়। মিনি কম্পিউটারে টার্মিনাল লাগিয়ে একসাথে প্রায় ৫০ জন ব্যবহার করতে পারে। এই কম্পিউটার ব্যবসায় বাণিজ্য ও গবেষণা কাজে ব্যবহার করা হয়। কয়েকটি মিনি কম্পিউটারের উদাহরণ হলঃ ibms/36, pdp-11, ncrs/9290 ইত্যাদি।
মাইক্রো কম্পিউটার কি?
আমরা যেসব কম্পিউটার ব্যবহার করি তা হল মাইক্রো কম্পিউটার। মাইক্রো মানে হল ক্ষুদ্র বা ছোট। মাইক্রো কম্পিউটারের অন্য নাম হল পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি (PC)।
এতে থাকে মাদার বোর্ড যাতে র্যাম, রোম, মাইক্রো প্রসেসর ইত্যাদি থাকে। এছাড়াও হার্ডডিস্ক , সিডি ড্রাইভ সহ অনেক কিছু নিয়ে মাইক্রো কম্পিউটার গঠিত হয়।
মাইক্রো কম্পিউটার কত প্রকার?
মাইক্রো কম্পিউটারকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
- ডেস্কটপ কম্পিউটার
- ল্যাপটপ কম্পিউটার
ডেস্কটপ কম্পিউটার কি?
ডেস্ক মানে হল টেবিল। যে কম্পিউটার টেবিলের উপর রেখে ব্যবহার করা যায় তাকে ডেস্কটপ কম্পিউটার বলা হয়। মাউস, সিপিইউ, মনিটর, কী-বোর্ড ইত্যাদি নিয়ে ডেস্কটপ কম্পিউটার গঠিত।
দাম কম হওয়ায় ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এই কম্পিউটার জনপ্রিয়। এছাড়াও আইবিএমের পিসি, কমোডোর এমিগা, অ্যাপলের মেকিনটোস ইত্যাদি ডেস্কটপ কম্পিউটারের উদাহরণ।
ল্যাপটপ কম্পিউটার কি?
ল্যাপটপ মানে হল কোলের উপর। আর এই কম্পিউটার কোলর উপর রেখে ব্যবহার করা যায় বলে একে ল্যাপটপ কম্পিউটার বলা হয়। এটি সহজে বহন করা যায় বলে খুব জনপ্রিয়। এছাড়াও এতে ব্যাটারি থাকায় বিদ্যুৎ না থাকালেও অনায়সে দীর্ঘসময় ব্যবহার করা যায়।
কম্পিউটারের সাহায্যে কি কি কাজ করা হয়?
কম্পিউটারের সাহায্যে মূলত যােগ, বিয়ােগ, গুণ, ভাগ ইত্যাদি কার্যাবলী সম্পাদন করা যায়। কিন্তু বর্তমান যুগে কম্পিউটারের বহুমুখী ব্যবহারের ফলে কম্পিউটারের সংঙ্গা অনেক ব্যাপকতা লাভ করেছে।অর্থাৎ কোন সীমিত সংঙ্গা দিয়ে কম্পিউটারকে গন্ডীবদ্ধ করা যায় না। তাই কম্পিউটার সেকেন্ডের মধ্যে কোটি কোটি হিসাব-নিকাশ করতে পারে। কম্পিউটারের কাজের গতি হিসাব করা হয় ন্যানোসেকেন্ডে।
আর এই ন্যনোসেকেন্ড হল এক সেকেন্ডের একশত কোটি ভাগের একভাগ সময় মাত্র। কম্পিউটারের মধ্যে অনেক বর্তনী থাকে। তাই ইলেকট্রন প্রবাহের মাধ্যমে কম্পিউটারের যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালিত হয়।
কম্পিউটারের ভাষা বা কম্পিউটার ল্যাংগুয়েজ ইলেকট্রনিক সংকেতের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। তবে কম্পিউটারের বোধগম্য এ ভাষার মাধ্যমে কম্পিউটারে যে নির্দেশ দেয়া হয় তারই ভিত্তিতে কম্পিউটার ফলাফল প্রদান করে।
কম্পিউটারের এ নির্দেশনাবলিকে বলা হয় প্রোগ্রাম। প্রোগ্রাম ছাড়া কম্পিউটার একটি জড় পদার্থ ভিন্ন আর কিছু নয়। তাছাড়া উপযুক্ত প্রোগ্রামের ফলে কম্পিউটার জড় পদার্থ হতে গাণিতিক শক্তিসম্পন্ন বুদ্ধিমান যন্ত্রে পরিণত হতে পারে।
কম্পিউটারের কাজ (Function of Computer) কি?
প্রধানত কম্পিউটারে চারটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করা হয়ঃ- সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহারকারী দ্বারা তৈরি প্রােগ্রাম (Programs) কম্পিউটার গ্রহণ করে মেমােরিতে সংরক্ষণ করে। এবং ব্যবহারকারীর নির্দেশে কম্পিউটার প্রােগ্রাম নির্বাহ (Execute) করে থাকে।
- মাউস (Mouse), কী-বাের্ড (Keyboard), জয়স্টিক (Joystick), ডিস্ক ইত্যাদির মাধ্যমে ডেটা (Data) বা উপাত্ত গ্রহণ করে।
- মনিটর (Monitor), প্রিন্টার (Printer) ইত্যাদির মাধ্যমে কম্পিউটার ফলাফল প্রকাশ করে থাকে।
- ডেটা প্রক্রিয়াকরণ (Process) করে।
কম্পিউটার এর বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Computer)?
বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রের মতাে কম্পিউটারেরও নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। উল্লেখযােগ্য কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হলঃ- দ্রুতগতি (High speed)
- স্মৃতিশক্তি (Memory)
- স্বয়ংক্রিয়তা (Automation)
- যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত (Logical
- নির্ভুলতা (Correctness)
- সূক্ষ্মতা (Accuracy)
- বিশ্বাসযােগ্যতা (Reliability)
- ক্লান্তিহীনতা (Dilligence)
- Decision)
- অসীম জীবনীশক্তি (Endless Life)
- বমুখিতা (Versatility)
নিচে কম্পিউটারের উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্যগুলাের বিস্তারিত আলােচনা করা হলঃ
দ্রুতগতি (High speed) কি?
বৈদ্যুতিক সিগন্যালের মাধ্যমে কাজ করে বিধায় কম্পিউটার খুব দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারে। তাছাড়া কম্পিউটার এক সেকেন্ডের মধ্যে কয়েক কোটি যােগ বিয়োগ করতে পারে। কম্পিউটারের সময়ের একক হল ন্যানােসেকেন্ড ও পিকোসেকেন্ড ইত্যাদি।
স্মৃতিশক্তি (Memory) কি?
কম্পিউটারের মধ্যে নিজস্ব স্মৃতিশক্তি (Memory) আছে। কম্পিউটারের মেমােরিতে নির্দেশ (প্রােগ্রাম), প্রয়ােজনীয় ডেটা এবং প্রক্রিয়াজাত ফলাফল বা তথ্য সংরক্ষিত করে রাখা যায়।
স্বয়ংক্রিয়তা (Automation) কি?
কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে। আর এ কারণে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে মানুষের পরিবর্তে কম্পিউটারকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া আরাে অনেক ক্ষেত্রে যেমনঃ বিস্ফোরক গবেষণায় ও কল-কারখানায় কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত (Logical Decision) কি?
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবস্থা বিচার করে কোন ধরনের কাজ করতে হবে। তার আগাম নির্দেশ দিয়ে রাখলে যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিভিন্ন ধরনের কাজ কম্পিউটার নিজে নিজে করতে পারে।নির্ভুলতা (Correctness) কি?
কম্পিউটার হল একটি মেশিন। মানুষের দেওয়া সূত্র ও যুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটার দ্রুত ফলাফল প্রদান করে। কম্পিউটার কখনও ভুল করে না। কম্পিউটারের নির্ভুলতা শতকরা ১০০ ভাগ হয়ে থাকে।
সূক্ষ্মতা (Accuracy) কি?
কম্পিউটারের স্মৃতিশক্তি অনেক বেশি। তাই অনেক ঘর পর্যন্ত নির্ভুলভাবে গাণিতিক ক্রিয়াকলাপ করতে পারে। আর এ কারণে কম্পিউটারের সূক্ষ্মতা অনেক বেশি ধরে নেয়া যায়।
বিশ্বাসযােগ্যতা (Reliability) কি?
কম্পিউটার নির্ভুল ও সূক্ষ্মভাবে কাজ করে। আর কাজ করার জন্য কম্পিউটার মানুষের দেয়া নির্দেশগুলো ব্যবহার করে। কম্পিউটার ভুল করে না কিন্তু মানুষ করে, এটা প্রমাণিত।
ক্লান্তিহীনতা (Dilligence) কি?
কম্পিউটার হল একটি যন্ত্র। আর এ যন্ত্রের একটি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হল ক্লান্তিহীনতা। কম্পিউটার রাত দিন ক্লান্তিহীন, বিরক্তিহীন এবং বিশ্রামহীনভাবে কাজ করতে পারে।
অসীম জীবনসীমা (Endcess Life) কি?
সাধারণত কম্পিউটার চালানাে হয় প্রােগ্রাম ব্যবহার করে। মানুষের জীবনের যেমন একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। কিন্তু প্রোগ্রামের কোন নির্দিষ্ট জীবনসীমা নেই।তবে মানুষের তৈরি প্রোগ্রাম বছরের পর বছর সমান যােগ্যতায় একই মানে কাজ করে যেতে পারে। দীর্ঘদিন কাজ করার পরও প্রােগ্রামের কোন মানের কমতি হয় না।
ব্যবহারের বহুমুখিতা (Versatility) কি?
বহুমুখী কাজে কম্পিউটারকে ব্যবহার করা যায়। কম্পিউটার হল একটি প্রােগ্রাম নির্ভর যন্ত্র। যখন যে প্রোগ্রাম কম্পিউটারে লােড করা থাকে। সে প্রােগ্রাম অনুসরণ করে কম্পিউটার কাজ করতে পারে।একটি কম্পিউটারে যেমনঃ হিসাব-নিকাশের প্রােগ্রাম ব্যবহার করে হিসাব-নিকাশ করা যায়। তেমনিভাবে মাল্টিমিডিয়া সফটওয়্যার ব্যবহার করে ছবি দেখা যায় বা গানও শােনা যায়।
কম্পিউটার দিয়ে কাজ করার সুবিধা?
কম্পিউটার দিয়ে কাজ করার অনেক ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়ঃ- কম্পিউটার খুব সহজে দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারে।
- নির্ভুল ফলাফল পাওয়া যায়।
- কম্পিউটারের মেমোরিতে অনেক তথ্য সেভ করে রাখা যায়। এবং খুব তাড়াতাড়ি কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
- কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে থাকে।
- কম্পিউটার যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
- কম্পিউটার ডেটা প্রসেসিং এর মাধ্যমে ডেটা বিশ্লেষণ করতে পারে।
- একই কম্পিউটার অনেক ধরনের কাজ করতে পারে।
- কল্পনাহীনভাবে টানা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে পারে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার?
- ওয়ার্ড প্রসেসিং অথবা লেখালেখির কাজে টাইপরাইটারের বিকল্প হিসেবে অফিস আদালতে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
- ব্যাংকিং, শেয়ার বাজার ও ইনস্যুরেন্স ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে লেনদেনের হিসাব তৈরি ও সংরক্ষণের কাজে গতানুগতিক পদ্ধতি বাদ দিয়ে আজকাল কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
- অফিসের যাবতীয় ব্যবস্থাপনার কাজে আজকাল কম্পিউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
- মুদ্রণশিল্পে প্রকাশনামুলক যে কোন কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে।
- শিল্প ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণের কাজেও কম্পিউটার ব্যবহার হয়।
- যন্ত্রপাতি, মোটরগাড়ি, জাহাজ, অ্যারোপ্লেন, ঘরবাড়ি, ব্রিজ ইত্যাদি ডিজাইন করার ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
- আধুনিক সামরিক বাহিনীতে নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কম্পিউটারকম্পিউটার কি | কম্পিউটার এর বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করা হয়।
- বিভিন্ন ধরনের গবেষণামূলক কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
- একস্থান থেকে অন্যস্থানে সংবাদ প্রেরণের ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
- শিক্ষাক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
- আবহাওয়া পূর্বাভাস পর্যবেক্ষণের কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। বিনোদনের ক্ষেত্রে যেমনঃ টিভি দেখা, ভিডিও দেখা ও গান বাজানো ইত্যাদি ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
- যোগাযোগ ব্যবস্থায় টিকিট বিক্রি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ট্রান্সপোর্টের ডিরেকশন ও নির্ণয়ের কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
কম্পিউটার ও মানুষের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য?
মিল/সাদৃশ্যসমূহ
আসলে কম্পিউটার ও মানুষের কাজের পদ্ধতিগত বেশ মিল রয়েছে যেমনঃ
কম্পিউটারের ক্ষেত্রে
কম্পিউটারের মাধ্যমে কোন সমস্যা সমাধান করতে হলে কম্পিউটারকে প্রয়োজনীয় তথ্য বা ডাটা দিতে হয়। এই তথ্য প্রদানের কাজটিকে ইনপুট (Input) বলা হয়। তথ্য ইনপুট পাওয়ার পর কম্পিউটার ব্যবহারকারীর নির্দেশ মোতাবেক ব্যবহারকারীকে ফলাফল জানিয়ে দেয়।
তাকে বলে আউটপুট (Output)। এ ইনপুট ও আউটপুটের মধ্যবর্তী পর্যায়ে কম্পিউটার ডাটা Processing করে থাকে।
মানুষের ক্ষেত্রে
মানুষের কাজের পদ্ধতির দিকে লক্ষ্য করলে কম্পিউটারের কার্যপদ্ধতির সাথে বেশ কিছু সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। যেমনঃ শরীরের কোন অংশে মশা কামড়ালে আমরা মশাকে মেরে ফেলি। এক্ষেত্রে মশা কামড়ানো হল ইনপুট (Input)।
মশা কামড়ানোর ফলে ইনপুট তাৎক্ষণিক ভাবে মস্তিষ্কে পৌছে যায়। মস্তিষ্ক ইনপুট প্রক্রিয়া (processing) করে হাতকে মশা মারার নির্দেশ দেয়। ফলে হাত মশাকে মেরে ফেলে যা (output)। সুতরাং বলা যায় মানুষ ও কম্পিউটারের মধ্যে কার্যপদ্ধতিগত মিল আছে।
অমিল/বৈসাদৃশ্যসমূহ
প্রধান বৈসাদৃশ্য হল কম্পিউটার নিজে কোন কাজ করতে পারে না, যা মানুষ পারে। মানুষ যা নির্দেশ দেয় কম্পিউটার ঠিক তাই করতে পারে। তবে তা বিশ্বস্তভাবে, নির্ভুলভাবে ও দ্রুতগতিতে করতে পারে।মানুষ চিন্তা করতে পারে, যা কম্পিউটার করতে পারে না। মানুষের মাঝে উদ্ভাবনী শক্তি আছে কিন্তু কম্পিউটারের উদ্ভাবনী শক্তি নেই। মানুষের মধ্যে মানবীয় গুণ যেমনঃ নীতি-নৈতিকতা, লজ্জা, রাগ, ঘৃণা, আনন্দ, ভয়, প্রেম-ভালোবাসা প্রভৃতি রয়েছে।
কম্পিউটারের মধ্যে এসকল বিষয় অনুপস্থিত। মানুষের শরীর একই রকম হলেও পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ প্রতিটি মানুষ হতে দেখতে আলাদা। কম্পিউটারের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি তেমন দেখা যায় না।
কম্পিউটারের জনক কে?
হাওয়ার্ড অ্যাইকন হলেন কম্পিউটারের জনক। কারণ হল তিনি সর্বপ্রথম কম্পিউটার আবিষ্কার করেছিলেন। পরবর্তীতে ১৮১০ সালে চার্লস ব্যাবেজ যিনি প্রথম যান্ত্রিক উপায় ব্যবহার করে সংখ্যা ও সারণী গণনা করার মাধ্যমে কম্পিউটারের আধুনিক ভার্সন তৈরি করেন। যার কারণে চার্লস ব্যবেজকেই আধুনিক কম্পিউটারের জনক হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।