ভিডিও কনফারেন্সিং হল ইন্টারনেট নির্ভর একটি অত্যাধুনিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। যে কোন ভৌগোলিক দূরত্বে অবস্থানকারী একাধিক ব্যক্তিবর্গের মধ্যে টেলিকমিউনিকেশন প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সংঘটিত যে যোগাযোগ ব্যবস্থায় কথা বলা পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গ ভিডিওর মাধ্যমে পরস্পর সরাসরি প্রত্যক্ষ করতে পারেন তাকে ভিডিও কনফারেন্সি।
ভিডিও কনফারেন্সিং |
ভিডিও কনফারেন্সিং এর জন্য প্রয়োজন ওয়েবক্যাম, ইন্টারনেট কানেকশন এবং স্পিকারসহ প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার (স্কাইপি, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, মসেঞ্জার ইত্যাদি)। বর্তমানে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবসায়-বাণিজ্য ছাড়াও শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
যোগাযোগের ক্ষেত্রে এটি একটি অতি আধুনিক দ্রুততম ও কার্যকর প্রযুক্তি হিসেবে বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ভিডিও কনফারেন্সিং কাকে বলে?
শব্দ শুনে এবং ছবি দেখে বিশ্বের যেকোন শহর ও স্থানে অবস্থান করে টেলিকমিউনিকেশন যন্ত্রপাতি যেমন কম্পিউটার, স্মার্টফোন, টেলিভিশন ব্যবহার করে সভা কার্যক্রম পরিচালনা করার কৌশল হল ভিডিও কনফারেন্সিং।
একাধিক ভৌগোলিক স্থানে অবস্থান করে টেলিকমিউনিকেশন যন্ত্রপাতির সাহায্যে ভিডিও তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যমে গড়ে ওঠা যোগাযোগকে ভিডিও কনফারেন্সিং বলে।
ভিডিও কনফারেন্সিং এর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ?
ভিডিও কনফারেন্সিং এর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো হচ্ছেঃ- ওয়েবক্যাম (Webcam)
- মাল্টিমিডিয়া কম্পিউটার (Multimedia Computer)
- মাইক্রোফোন (Microphone)
- টেলিফোন সংযোগ (Telephone Connection)
- ইন্টারনেট সংযোগ (Internet Connection)
- ভিডিও ক্যাপচার কার্ড (Video capture card)
- প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার সমূহ (Required Software)
- মডেম (Modem) ইত্যাদি।
ভিডিও কনফারেন্সিং এর গুরুত্ব কেন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে?
পৃথিবীর যেকোন অবস্থানে থেকেও একে অপরের ভিডিও দেখে দেখে তথ্য আদান প্রদান করা সম্ভব হওয়ায় ভিডিও কনফারেন্সিং এর গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এর সাহায্যে রোগীরা দূরে অবস্থানরত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নিকট থেকে যেকোন স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারে।এছাড়া প্রত্যেক অঞ্চলের রোগীরা ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবহার করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডাক্তারদের নিকট থেকে টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করতে পারে। দূরে অবস্থান করেও কাছে থাকার মত সব ধরনের সেবা পাওয়া যায় বলে এর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভিডিও কনফারেন্সিং এর সুবিধা?
- যেকোন ভৌগোলিক দূরত্ব থেকে একাধিক ব্যক্তির মধ্যে একেবারে মুখোমুখি সাক্ষাৎ এর ন্যায় বার্তালাপ লাইভ ভিডিও যোগাযোগ সম্ভব।
- যা ব্যক্তির সময় ও ভ্রমণ ব্যয় ব্যাপকভাবে সাশ্রয় করে।
- পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকে সভায় অংশগ্রহণ করা যায়।
- ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা সামাজিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষায় কার্যকরী ভুমিকা পালন।
- যাতায়াতের প্রয়োজন হয় না বলে সময়ের অপচয় হয় না।
- প্রত্যন্ত বা দুর্গম এলাকায় অবস্থা করেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা সেবা, উন্নত শিক্ষাসহ আরও বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করা যায়।
- ভিডিও কনফারেন্সিং রেকর্ড করে রাখা যায়, যার ফলে যেকোন সময় আবার দেখা যায়।
- যেকোন ভৌগোলিক দূরত্বে থেকে যে কোন সভা, সমাবেশ, সরকারি কর্মকান্ড, অফিসিয়াল মিটিং, রাজনৈতিক কর্মসূচিসহ যেকোন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা বা বক্তব্য প্রদান করা সম্ভব।
- শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপকভাবে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবহৃত হয়।
- নিজ ঘরে বসেই অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে কথা বলে সেবা নেওয়া যায়।
- যেকোন ভৌগোলিক দূরত্বে থেকে নিজ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিবেশ অবলোকন, কর্মীদের মনিটরিং, জরুরি অফিসিয়াল সাক্ষাৎ সহ যেকোন ব্যবসায়িক কর্মকান্ড পরিচালনা করা সম্ভব।
ভিডিও কনফারেন্সিং এর অসুবিধা?
প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা হল ভিডিও কনফারেন্সিং এর অন্যতম প্রধান অসুবিধা। আপনার কাছে সবকিছু তৈরি থাকতে পারে। তবে শেষ মুহুর্তে কিছু ভুলও হতে পারে।
আর তাই ইন্টারনেট সংযোগ, চিত্র, শব্দ এটি হল আপনার প্রযুক্তিগত ত্রুটিগুলো জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যা আপনি এই মুহুর্তে কিভাবে সমাধান করবেন তা জানেন না। এটি প্রযুক্তিগত চাপ তৈরি করে থাকে।