আমরা সকলেই ইন্টারনেট ব্যবহার করি। কিন্তু আমাদের মধ্যে খুব কম মানুষই আছে যারা ফেসবুক, ইউটিউব, উইকিপিডিয়া এবং গুগল ছাড়াও যে ইন্টারনেটের বিশাল একটি অংশ আছে।
ডার্ক ওয়েব |
যা আপনি কোন রকম সার্চ ইঞ্জিন দিয়ে সার্চ করে পাবেন না। সেই ওয়েবসাইট গুলোকে বলা হয় ডার্ক ওয়েব। ডার্ক ওয়েব হচ্ছে world wide web এর একটি উপাদান। যা কিনা ডার্ক নেট অর্থাৎ একটি লুকানো নেটওয়ার্কিং সিস্টেম।
এটি জনসাধারণের কাছ থেকে একটি লুকানো নেটওয়ার্ক। যে নেটওয়ার্ক সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ডার্ক ওয়েব হচ্ছে ডিপ ওয়েবের একটি অংশ। আমরা যদি ইন্টারনেটকে ভাগ করতে চাই তাহলে আমরা ইন্টারনেটকে তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারিঃ
- ওপেন ওয়েব বা সার্ফেস ওয়েব (OpenWeb/Surface web)
- ডিপ ওয়েব (Deep web)
- ডার্ক ওয়েব (Dark Web)
ওপেন ওয়েব বা সার্ফেস ওয়েব (OpenWeb/Surface web) কি?
ইহা হল ওয়েবের পাবলিক অংশ। যেখানে চাইলেই যে কেউ সাধারণ কোন ব্রাউজার দিয়েই ভিজিট করতে পারে। যেমনঃ আপনি এখন এই লেখাটি পড়ছেন ওপেন ওয়েবে।
আর সেই সাথে এই অংশের সব সাইটই মূলত সার্চ ইঞ্জিন যেমনঃ গুগল (Google), বিং (Bing), ডাকডাকগো (DuckDuckGo) ইত্যাদির মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
ডিপ ওয়েব (Deep web) কি?
ইহা হল সাধারণ ওপেন ওয়েবের বিপরীত পদ্ধতি। অর্থাৎ এখানে সবাই ভিজিট করতে বা ডেটা দেখতে পারবে না। বিশেষ ধরনের সার্চ ইঞ্জিন এবং অন্যান্য বিভিন্ন পদ্ধতিতে এই ধরনের সাইটে এক্সেস নিতে হয়।আর বেশির ভাগ ডিপ ওয়েব সাইট হচ্ছে ডেটাবেজ সমৃদ্ধ। আপনি এই ধরনের ডেটাবেজ কিন্তু ওপেন ওয়েব থেকেও সিকিউর পদ্ধতিতে এক্সেস করতে পারবেন।
কিন্তু পাবলিকালি কেউ পারবে না। যেমনঃ মনে করেন সরকারি সাইটের ডেটা কিংবা হোটেল বুকিং, ই-কমার্স সাইটের ডেটাবেজ ডিপ ওয়েবে সংরক্ষিত থাকে। এগুলো আপনি চাইলেই ভিজিট করতে পারবেন না।
ডার্ক ওয়েব (Dark web) কি?
ডার্ক ওয়েব হচ্ছে কয়েক ধাপে এনক্রিপ্ট করা এমন কিছু ওয়েবসাইট যেগুলোকে আপনি সাধারণ সার্চ ইঞ্জিন দিয়ে কখনো খুঁজে পাবেন না।আবার সেই সাথে সাধারণ যেসব ব্রাউজার দিয়ে আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করি সেগুলো দিয়ে এক্সেস বা ভিজিট ও করতে পারবেন না। ডার্ক ওয়েব ও ডিপ ওয়েব এর ছোট একটি অংশ।
ডার্ক ওয়েব বিস্তারিত (Dark web details) লেখ?
আসলে সব ধরনের প্রায় সব ডার্ক ওয়েব ক্যাটাগরির সাইট গুলোর টর এনক্রিপশনের মাধ্যমে এনক্রিপ্ট করা থাকে। এবং আপনি যখন টর ব্রাউজার দিয়ে ব্রাউজ করেন তখন শুধুমাত্র সেই সাইটের ডেটা গুলো ডিক্রিপ্ট করা যায়।আর একারণেই টর ব্রাউজার দিয়ে আপনি ডার্ক ওয়েবের সাইটগুলো সহজর এক্সেস করতে পারেন। টর ব্রাউজার মূলত আপনার আর ৫ টা প্রক্সি ব্রাউজারের বা ভিপিএনের মতোই আইপি এড্রেস স্পুফ বা চেঞ্জ করে ফেলে।
কিন্তু অন্য প্রক্সি ব্রাউজার বা ভিপিএনের তুলনায় টর বেশ কয়েক লেয়ারে কয়েক বার আপনার আইপি এড্রেস বিভিন্ন সার্ভার থেকে পরিবর্তন করে দেয়। যেন আপনি আপনার সত্যিকার আইডেন্টিটি না জানিয়েই কোন সাইট ভিজিট করতে পারেন।
টর ব্রাউজার দিয়ে সাধারণ ওয়েব সাইট কিংবা ডার্ক ওয়েবের সাইট যেটাই ভিজিট করেন না কেন একইভাবে আইপি এড্রেস স্পুফ হয়। তবে টর ব্রাউজার সেই সাথে ডার্ক ওয়েবের যে এড্রেসের মধ্যে আপনি ঢুকতে চাচ্ছেন সেটার ডেটাও ডিক্রিপট করে দেয়।
সব ধরনের সাইটই যে টর এনক্রিপশন ব্যবহার করে ঠিক তা না। অনেকেই I2P এর অন্য এনক্রিপশন ও ব্যবহার করে থাকে। আর তাই আপনি যখন ডার্ক ওয়েবের স্পেসিফিক লিংক ভিজিট করতে যাবেন।
সেক্ষেত্রে আপনাকে ঐ এনক্রিপশন টুলের জন্য যে ব্রাউজার আছে সেটা ব্যবহার করেই ভিজিট করতে হবে। I2P এর এনক্রিপশন আপনি Tor দিয়ে ভিজিট করতে পারবেন না।
ডার্ক ওয়েবে কি আছে?
ডার্ক ওয়েব মানেই যে খারাপ কিছু তা কিন্তু নয়। আপনি এখানে চাইল্ড পর্নোগ্রাফির মতো ভয়ংকর জিনিস ও যেমন দেখতে পাবেন। সেই সাথে ইতিবাচক অনেক কিছুই করতে পারবেন।যেমনঃ আপনি যদি চিন্তা করেন কোন এক নির্দিষ্ট মতাদর্শের জন্য জনমত গড়ে তুলবেন তাহলে যদি সেটা সাধারণত কোন সাইটে করতে যান সেক্ষেত্রে আপনাকে খুঁজে পাওয়া খুব সহজ হবে না।
যেমনঃ আপনি যদি এখন আমেরিকার কোন এক বিষয়ক গোপন ডেটা পেয়ে যান। এবং সেগুলো ফাঁস করে দিতে চান। তাহলে সার্ফেস ইন্টারনেট বা প্রচলিত ইন্টারনেটে প্রকাশ করলে আপনাকে সহজেই খুঁজে ধরে ফেলা যাবে।
কিন্তু এটা ডার্ক ওয়েবে করা হলে অনেকগুলো লেয়ারের এনক্রিপশন থাকায় আপনি অনেকটা নিরাপদ থাকতে পারবেন। তবে অনেকটা বলেছি কারণ এক্ষেত্রেও ভাল স্কিলের হ্যাকাররা আপনাকে খুঁজে ফেলতে পারবে।
এমন অনেক উদাহরণই আছে যে স্পেসিফিকালি ডার্ক ওয়েবে আপনি ওপেন ওয়েবের সব ধরনের সেবাই পাবেন যেমনঃ
- ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম (Video sharing platform) মেইল (Mail)
- সার্চ ইঞ্জিন (Search engine)
- বিভিন্ন ধরনের উইকি
- অনলাইন মার্কেটপ্লেস (Online marketplace)
- অপরাধী ভাড়া নেয়ার জন্য স্পেশাল সার্ভিস বা সেবা
- মাদক বেচাকেনার জন্য মার্কেট
এছাড়াও আরো সহজে নানা ধরনের সেবা আপনি ডার্ক ওয়েব থেকে পাবেন।
ডার্ক ওয়েব কি কাজে লাগে?
মূলত প্রধান তিনটি কারণে মানুষ ডার্ক ওয়েব ভিজিট করেঃএনিনোমাস বা নিজেকে গোপন রাখার জন্য
নিজেকে গোপন রাখার অনেক কারণই মানুষের থাকে। তবে অনেকে নিজেকে বিপদ থেকে বাচাতে গোপন রাখেন। যেমনঃ কোন কোন দেশে যদি আপনি নিজের স্বাধীনতা অনুযায়ী কথা বলতে না পারেন।
তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে নিজেকে গোপন রেখে সহজে কথা বলতে পারেন। এছাড়াও অনেক কারণেই মানুষ নিজেকে গোপন রাখতে চাই এবং ডার্ক ওয়েব এই জন্য সবার সেরা।
হিডেন সার্ভিস বা সেবা পেতে
হিডেন সার্ভিস বা সেবাকে অনেকে অনিওন সার্ভিস নামেও ডেকে থাকে। আর এরকম সার্ভিসগুলো আপনি ওপেন ওয়েবে খুঁজে পাবেন না।সেক্ষেত্রে আপনাকে ডার্ক ওয়েবে যেতেই হবে।
হিডেন সার্ভিস ওপেন ওয়েবে না দিয়ে ডার্ক ওয়েবে দেয়ার কারণ হল এখানে সাইটের আইডেন্টিটি অনেক সিকিউর এবং আপনার নিজের আইডেন্টিটিও সিকিউর।
তাই কেউ কার আসল পরিচয় খুঁজে পাবে না। ডার্ক ওয়েব নিজে কোন হিডেন সার্ভিস না হলেও অনেক সাইট যেগুলো ডার্ক ওয়েবে হোস্ট করা সেগুলো হিডেন সার্ভিস দেয়।
অবৈধ কাজের জন্য
এটা সঠিক যে ইতিবাচক বা ভালো কাজের জন্য খুব কমই ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করা হয়। বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেও অবৈধ কাজের জন্য ডার্ক ওয়েব বিশ্ব বিখ্যাত। ড্রাগ সেল করা, খুনি ভাড়া করা, চাইল্ড পর্নোগ্রাফি ও রেডরুম ভাড়া এধরনের সব কাজই আপনি ডার্ক ওয়েব সহজে দেখতে পাবেন।উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে জানুয়ারি ২০১৫ অবধি ডার্ক ওয়েবের সব থেকে বেশি সাইট হচ্ছে মাদক ক্রয় ও বিক্রয় করার। এর পরেই ধাপে আছে প্রতারণা, বিটকয়েন বেচাকেনা, উইকি, মেইল এধরনের সাইট।
অর্থাৎ ইন্টারনেটে সবচেয়ে বড় অংশ জুড়েই আছে অপরাধ এবং বেশিরভাগ মানুষ ঠিক এই কারণেই ডার্ক ওয়েবকে ভয় পায় বা নিষিদ্ধ মনে করে।
ডার্ক ওয়েব কি বৈধ? (Is the dark web illegal or legal?)
ডার্ক ওয়েবে ভিজিট করে আপনি যতক্ষণ না কোন অবৈধ কাজ করছেন তখন ডার্ক ওয়েব সম্পূর্ণ বৈধ। তবে আপনি যদি অপরাধ করেন এবং নিজেকে গোপন রাখতে ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করেন কিংবা কোন অবৈধ কাজ করতে ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করেন তাহলে সেটা অবশ্যই অবৈধ ও অপরাধ।ডার্ক ওয়েবের রিস্ক কি আছে?
ডার্ক ওয়েবে ভিজিট করতে গিয়ে কখনো যদি নিজের তথ্য বা আইডেন্টিটি প্রকাশ পেয়ে যায় অর্থাৎ আপনার আসল ইমেইল বা আইপি এড্রেস এধরণের কিছু প্রকাশ পেয়ে গেলে আপনি আসলেই অনেক বড় বিপদে পড়ে যেতে পারেন।কারণ হল সিকিউরিটি স্পেশালিষ্ট বা হ্যাকারদের অবাধ বিচরণ ডার্ক ওয়েবে। সেক্ষেত্রে আপনার তথ্য দিয়ে তারা যা খুশি তা করতে পারে।
তাই ডার্ক ওয়েবের ঝুঁকি অনেক। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি যখন আপনি ডার্ক ওয়েব দিয়ে অবৈধ কোন সাইট যেমনঃ পর্ন সাইট বা এরকম ধরনের কোন সাইটে ঢুকবেন। এদিক থেকে বেশি ঝুঁকি থাকে।
ডার্ক ওয়েবে কিভাবে ভিজিট করব?
যেহেতু পুরো পোস্টটি পড়ে ফেলেছেন। তাই ধারণা করছি ডার্ক ওয়েব সম্বন্ধে আপনার ধারণা বেশ পাকাপোক্ত হয়েছে। এখন আপনি যদি মনস্থির করে থাকেন যে ডার্ক ওয়েবে ভিজিট কিভাবে করব।তাহলে চলুন জেনে নেই। তবে একটা বিষয়ে সাবধান থাকবেন যে আপনার কোন রকম সমস্যা হলে আমি দায়ী থাকবে না। পুরো দায়ভার আপনার নিজের সাবধান!
তাহলে শুরু করা যাক। ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করার জন্য প্রথমে আপনার কিছু টুলস প্রয়োজন হবে। যেগুলোর কথা আমি আগেই বলেছি। তবুও চলুন একবার দেখে নেইঃ
(নিচের স্টেপগুলো মোবাইল কিংবা কম্পিউটার সব ক্ষেত্রেই কাজ করবে আশা করি)
সর্বপ্রথম আপনার লাগবে একটা সিকিউর ভিপিএন। হাল আমলের Nord VPN টা ইন্সটল করে নিতে পারেন। সেই সাথে যদি এর প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন থাকে তাহলে বেশ ভাল হবে। যেটাই ইচ্ছা হয় সেই ভিপিএন ইন্সটল করে ফেলবেন।
এরপরে লাগবে Unknown browser যেমনঃ Tor Browser, I2P ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। তবে অ্যান্ড্রোয়েড ইউজার হয়ে থাকলে। তাহলে লাগবে Orbot । পিসি হলে আমার সাজেশন থাকবে টর ব্রাউজার ইন্সটল করে ফেলুন আর অ্যান্ড্রোয়েড হলে Orbot।
ভিজিট করার জন্য লিংক। যেগুলো এই আর্টিকেলেই পেয়ে যাবেন। সব গুলো ইন্সটল হয়ে গেলে এখন আসল কাজ শুরু হবে। প্রথমত আমরা দুইতই পদ্ধতিতে ডার্ক ওয়েব ভিজিট করতে পারি।
১.Tor Over VPN
২. VPN Over Tor
২. VPN Over Tor
আচ্ছা নাম দেখে কনফিউজিং লাগতে পারে। তবে ব্যাপারটা অনেক সহজ চলুন ব্যাখ্যা করি।
১. Tor Over VPN কি?
এটা খুব সিম্পল একটি পদ্ধতি। এখানে প্রথমে আপনি VPN ইন্সটল করে ভিপিএন কানেক্ট করবেন। এবং এরপরে আপনি Tor বা যে Unknown browser ব্যবহার করছেন সেটা ইউজ করবেন।এক্ষেত্রে ভিপিএন এক্সট্রা লেয়ার হিসেবে কাজ করবে। তবে আপনার প্রাইভেসির দিক টা দেখবে আপনার ভিপিএন এবং টর আপনাকে আপনার আইডেন্টিটি গোপন রাখতে সাহায্য করবে।
এখন অবধি সব থেকে সিকিউর এবং সবথেকে পপুলার ডার্ক ওয়েব ভিজিটিং পদ্ধতি। যখন আপনি টর ব্রাউজারে কোন সাইটে ঢুকতে যাবেন তখন সেই রিকুয়েস্ট প্রথমে যাবে ভিপিএন এর মধ্যে।
এখন অবধি সব থেকে সিকিউর এবং সবথেকে পপুলার ডার্ক ওয়েব ভিজিটিং পদ্ধতি। যখন আপনি টর ব্রাউজারে কোন সাইটে ঢুকতে যাবেন তখন সেই রিকুয়েস্ট প্রথমে যাবে ভিপিএন এর মধ্যে।
এবং আপনার সমস্ত জিও লোকেশন রিমুভ করে দেবে সেই সাথে আপনার আইপি এড্রেস স্পুফ করে দিবে। তারপরেই ঐ রিকুয়েস্ট টর এর কাছে যাবে।
যেহেতু আগে থেকেই ভিপিএন আইপি স্পুফ করে দিচ্ছে। আর তাই টর ব্রাউজার ও আপনার রিয়াল আইপি জানবে না যেটা আলাদা সিকিউরিটি দিচ্ছে।
সুবিধা
- পুরো ট্রাফিক সহজে এনক্রিপ্ট থাকে।
- মেটা ডেটা বা আইপি এড্রেস কোন কিছুই এই পদ্ধতিতে স্টোর হয় না।
VPN Over Tor কি?
এই সিস্টেম খুব একটা সিকিউর না। তবে অনেকেই ইহা ব্যবহার করে। এই পদ্ধতিতে আপনি প্রথমেই আপনার রিকুয়েস্ট টর এ দিচ্ছেন। এবং এর পড়ে সেই রিকুয়েস্ট ভিপিএন এর মধ্যে যাচ্ছে।যেহেতু প্রথমেই টর এ যাচ্ছে তাই আপনার ইন্টারনেট প্রোফাইডার বা ISP আপনার তথ্য থেকে বুঝতে পারবে যে আপনি ডার্ক ওয়েব ভিজিট করার চেষ্টা করছেন। এক্ষেত্রে ISP আপনাকে ব্লক করে রাখতে পারে। এবং আপনার তথ্যও চাইলে সহজে হাতিয়ে নিতে পারে।
সুবিধা
যদি আপনি ভিপিএন সার্ভিস প্রোভাইডারকে বিশ্বাস না করেন বরং ISP কে বেশি বিশ্বাস করেন। তাহলে এটা ভাল একটি পদ্ধতি। ব্লক টর নোড গুলো এক্সেস করা যায় অর্থাৎ দ্রুত কাজ করে।যেহেতু প্রথম পদ্ধতি সব থেকে বেশি জনপ্রিয় এবং সিকিউর তাই প্রথম পদ্ধতিতেই আমরা এগিয়ে যাবো। তাহলে ভিপিএন ইন্সটল করে নিয়ে টর ব্রাউজারে ঢুকে পড়ুন।
আসলে সত্যি বলতে আমরা এতক্ষণে সব কনফিগার শেষ করে ফেলেছি এখন আমরা ভিজিট করার জন্য রেডি। টর ব্রাউজার ওপেন করেই দেখতে পাবেন যে এটা আর ৫ টা ব্রাউজারের মতো একদম সাধারণ।
তবে আপনি শুধুমাত্র নিচের যেকোন লিংক কপি করে পেস্ট করলেই ভিজিট করতে পারবেন। তবে হ্যাঁ ভিজিট করতে একটু সময় লাগবে। কারণ বেশ কয়েকধাপ এনক্রিপশনের জন্য আপনার নেট স্পিড একটু কমে যায়।
প্রয়োজনীয় ডার্ক ওয়েব লিংকঃ
The Hidden WiKi
এটি হচ্ছে আমাদের উইকিপিডিয়ার ডার্ক ওয়েবের রূপ। এখানে গিয়ে উইকিপিডিয়ার মতো বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবেন। নিচের অনিওন লিংক দিয়ে ভিজিট করতে পারেন।
onion link:
http://zqktlwi4fecvo6ri.onion/
Torch
এটি হচ্ছে গুগলের ডার্ক ওয়েব ভার্সন। পুরো ডার্ক ওয়েব জগত ঘুরে বেড়াতে গেলে আপনার প্রথম প্রয়োজন হবে একটা ভাল সার্চ ইঞ্জিন এবং এটা সেই কাজ ই করবে।onion link:
http://xmh57jrzrnw6insl.onion/
DuckDuckGo
আপনি যদি সার্ফেস ওয়েবের ডাক ডাক গো কে চিনে থাকেন। তাহলে আপনার জন্য সুখবর হচ্ছে ডার্ক ওয়েবেও আপনি পাচ্ছেন ডাক ডাক গো এর অফিসিয়াল ভার্সন। যা চাইলে আপনি নিচের লিংক থেকে ভিজিট করতে পারবেন এবং ইচ্ছামতো সার্চ করতে পারবেন।onion link:
https://3g2upl4pq6kufc4m.onion/
Daniel
আপনি যদি ডার্ক ওয়েবের জনপিয় লিংক গুলো একসঙ্গে ক্যাটাগরি আকারে পেতে চান। তাহলে নিচের টর লিংক টা আপনার জন্য সেরা। এখানে বিভিন্ন ধরনের লিংক আপনি ক্যাটেগরি আকারে পেয়ে যাবে। তবে নিজের ইচ্ছামতো চাইলেই সেগুলো ভিজিট করে দেখতে পারেন।onion link:
http://danielas3rtn54uwmofdo3x2bsdifr47huasnmbgqzfrec5ubupvtpid.onion/
ডার্ক ওয়েব ভিজিট করার সময় সতর্কতা?
যত ভিপিএন কিংবা টর ব্রাউজার ই ব্যবহার করেন না কেন। সত্যি বলতে ঝুঁকি আমাদের থেকেই যায়। আর এই ঝুঁকির জন্যই আমাদের অনেক সতর্কতা প্রয়োজন যেমনঃটর এর সিকিউরিটি সেটিং?
যদিও টর এর ডিফল্ট সিকিউরিটি সিস্টেম অনেক ভাল। এবং সেফ তবুও সাবধানের মাইর নেই তাই ব্রাউজারের আইকনে ক্লিক করে সিকিউরিটি সেটিং ওপেন করুন।এরপর সেখান থেকে স্লাইডারের ডান পাশে টেনে সিকিউরিটি বাড়িয়ে নিন। একদম সর্বোচ্চ করে নেয়াই সবথেকে উত্তম। কখনোই আপনার ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করবেন না।
না জেনে কখনো কোন লিংকে ক্লিক করবেন না। আসল তথ্য বা উপাত্ত দেয়ার কোন প্রয়োজন নাই। তবে আপনি ইমেইল ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সবসময় ডার্ক ওয়েবের ইমেইল ভার্সন ব্যবহার করবেন।
আর এত সব সিকিউরিটি মেইন্টেন করেও যে আপনি ১০০% সেফ সেটাও বলা যায় না। তাই কৌতূহল বশত ভিজিট করলেও কোন একশন যেমন কিছু কেনা বা বিক্রি করার চেষ্টা না করাই অনেক ভাল।
পরিশেষে বলা যায় ডার্ক ওয়েব যেহেতু নিষিদ্ধ না এবং এর ভেতরে খারাপের পাশাপাশি ভালো ও আছে। তাই আপনার কৌতহলকে একদম চাপা না দিয়ে সব সিকিউরিটি মেইনটেন করে ভিজিট করতে পারেন। আশা করছি আপনার সেই আশা পূরণে আজকের এই পোস্টটি যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।