ভ্যাট ডাই এর ইতিহাস?

নীল বা ইন্ডিগো ভারত উপমহাদেশের ব্যবহৃত প্রাচীন রং৷ এ ইন্ডিগো রং টি মিশর এবং রোমান সাম্রাজ্যের কিছু অংশেও প্রচলিত ছিল৷ প্রাচীন কাজে প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত এ ইন্ডিগো কালারকে বিশেষভাবে নির্মিত কাঠের পাত্রবিশেষে অরগানিক ম্যাটার দ্বারা চোলাইকরণ করেও রিডিউসড করে দ্রবণীয় করা হতো৷ কাঠের এ পাত্রটি ভ্যাট নামে পরিচিত ছিল৷ এখান থেকেই ভ্যাট ডাই এর নামকরণ হয়েছে৷ ইন্ডিগো এর মতো অন্য যে সকল ডাইকে দ্রবণীয় করে ডাইং করা হতো তাদেরকে ভ্যাট ডাই বলা হয় এবং এ পদ্ধতিকে ভ্যাটিং (Vatting) বলা হয়৷

ভ্যাট ডাই পানিতে অদ্রবণীয়৷ ভ্যাটিং না করে টেক্সটাইল দ্রব্যে প্রয়োগ করা যায় না৷ এ ডাইকে রিডিউসিং এজেন্ট দ্বারা প্রক্রিয়া করলে ইহা লিউকো কম্পাউন্ড এ পরিণত হয় যা অ্যালকালির উপস্থিতিতে পানিতে দ্রবণীয়৷ ভ্যাট ডাই এর এ লিউকো কম্পাউন্ডে পরিণত হওয়াকে ভ্যাটিং বলে৷ এ লিউকো কম্পাউন্ড সেলুলোজের সহিত বিক্রিয়া করে৷ 

ভ্যাট ডাইং
ভ্যাট ডাইং

পুনরায় একে বাতাসের অক্সিজেন অনাবৃত রাখলে ইহা ফাইবারের মধ্যে পুনরায় অক্মিডাইজম হয়ে অদ্রবণীয় কালারে পরিণত হয়৷ ভ্যাট ডাই এ অনেক ধরনের কালারিং গ্রুপ থাকে৷ তবে এক বা একাধিক কার্বনিল (> C = O) গ্রুপ প্রত্যেকটি ডাইস্টাফে থাকে৷ এ কার্বনিল গ্রুপ থাকার কারণে ভ্যাট ডাই অদ্রবণীয় হয়৷

এ ডাইকে প্রথমে রিডিউসিং এজেন্ট হাইড্রোজ (Na2 S2 O4) দ্বারা প্রক্রিয়া করলে কার্বনিল (> C = O) গ্রুপ লিউকো কম্পাউন্ডে (> c – OH) পরিণত হয়৷ আর এ লিউকো কম্পাউন্ড সোডিয়াম হাইড্রোক্সইডের (NaOH) সহিত বিক্রিয়া করে সোডিয়াম সল্ট অব লিউকো কম্পাউন্ড তৈরি করে থাকে যা পানিতে দ্রবণীয়৷ পরে ইাহার জলীয় দ্রবণ দ্বারা ডাইং করা হয়৷ 

ডাইং করার পর দ্রব্যকে বাতাসে অনাবৃত রাখলে বায়ুর অক্সিজেনের উপন্থিতিতে ইহা পুনরায় অদ্রবণীয় কালার কম্পাউন্ডে পরিণত হয়ঃ

রিডাকশন

> C = O ————————

Za2 S2 O4 + H2O


> C —  OH _NaOH  > C –ONa

অদ্রবণীয় দ্রবণীয়


2 NaHSO3 + 2H


>C-ONa_ H2O > C–OH [O]    > C=O

দ্রবণীয়   অদ্রবণীয়

অতএব যে ডাইকে ভ্যাট নামক পাত্রে সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইড বা হাইড্রোজ নামক রিডিউসিং এজেন্ট এরং কস্টিক সোডা (NaOH) দ্রবণে ক্রিয়া করিয়ে দ্রবণীয় করতে হয় সেই শ্রেণীর ডাইকে ভ্যাট ডাই বলে৷

Next Post Previous Post