মার্সেরাইজিং কাকে বলে | মার্সেরাইজিং কেন করা হয় | মার্সেরাইজিং এর ইতিহাস

মার্সেরাইজিং কি?

কটন সুতাকে কাপড়ে টান টান অবস্থায় কম তাপমাত্রায় ৪৫°-৫৫° (TW) টোয়াডেল এ কস্টিক সোডার (NaOH) দ্রবণের ভেতর দিয়ে অতিক্রম করানো হয়। 

ফলে সুতা কিংবা কাপড় কতগুলো বিশেষ গুণের অধিকারী হয়। যার মধ্যে শক্তি, উজ্জ্বলতা ও শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি অন্যতম। 

মার্সেরাইজিং কাকে বলে?

যে প্রক্রিয়ার সাহায্যে কটন সুতা বা কাপড়কে কক্ষ তাপমাত্রা (১৮° সে.) ৫৫° থেকে ৬৫° টোয়াডেল ঘনত্ববিশিষ্ট কস্টিক সোডা দ্বারা টেনশন সহযোগে ক্রিয়া করে সুতা বা কাপড়ের চাকচিক্যতা তথা উজ্জ্বলতা, শক্তি, রং শোষণ ক্ষমতা ইত্যাদি বৃদ্ধি করা হয় তাকে মার্সেরাইজিং বলে।

মার্সেরাইজিং কেন করা হয়?

  • চাকচিক্যতা তথা উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা। 
  • রং শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
  • টেনসাইল শক্তি বৃদ্ধি করা।
  • ক্ষয়রোধ শক্তি বৃদ্ধি করা।
  • কম তাপমাত্রায় কেমিক্যাল রিয়্যাকটিভিটি বৃদ্ধি করা। 
  • কাপড়ের মসৃণতা বৃদ্ধি করা। 
  • পানির শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। 
  • আলোতে ক্ষয়রোধ শক্তি বৃদ্ধি করা। 

মার্সেরাইজিং এর ইতিহাস?

ইংল্যান্ডের জন মার্সার নামক জনৈক বিজ্ঞানী ১৮৮৪ সালে এ পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেন। তার নাম অনুসারে এ পদ্ধতিটির নামকরণ করা হয় মার্সেরাইজিং। পরবর্তীতে ১৮৯৫ সালে এ পদ্ধতিতে কটন সুতা ও কাপড়কে ঘন কস্টিক সোডা দ্রবণে ক্রিয়া করানো হলে এর উজ্জ্বলতা, শক্তি এবং শোষণ ক্ষমতা ইত্যাদি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। 
মার্সেরাইজিং
মার্সেরাইজিং

এটি একটি ফিজিও কেমিক্যাল পদ্ধতি। মার্সেরাইজিং এর ফলে কটন ফাইবারের ভৌত ও রাসায়নিক গুণাবলির পরিবর্তন। আর এ পদ্ধতি সাধারণত কটন সুতা ও কাপড়ের ওপর ব্লিচড অবস্থায় প্রয়োগ করা হয়। এ পদ্ধতিতে মূলত ফিনিশিং পদ্ধতি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। 

যদিও এটি ডাইং ও প্রিন্টিং এর পূর্বে করা হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে সাধারণত কটন সুতা বা কাপড়কে ১৭.৫% হতে ১৮% বা ৫৫° থেকে ৬৫° টোয়াডেল ঘনত্ববিশিষ্ট কস্টিক সোডা দ্রবণে কক্ষ তাপমাত্রায় টান টান অবস্থায় ক্রিয়া করানো হয়। টেক্সটাইল ওয়েট প্রসেসে মার্সেরাইজিং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 

বিশেষ করে কটন কাপড়ের প্রিন্টিং মান বৃদ্ধির জন্য এ পদ্ধতিকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া ব্লিচড ফিনিশড পণ্যের ক্ষেত্রে মার্সেরাইজিং পদ্ধতিকে ফিনিশিং পদ্ধতি হিসেবে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়। 

মার্সেরাইজিং এর সুবিধা?

  • মার্সেরাইজিং এর ফলে কটন সুতা ও কাপড়ের শক্তি ২০% থেকে ৩০% বৃদ্ধি পায়, এজন্য তাঁতের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। 
  • মার্সেরাইজিংকৃত কাপড় প্রিন্টিং ও ডাই করা হলে তার ডাইং ও প্রিন্টিং সমভাবে হয় এবং কাপড়ের নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ রং শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 
  • কম তাপমাত্রায় কেমিক্যাল রিয়্যাকটিভিটি বৃদ্ধি পায়।
  • এ ক্রিয়ার ফলে ফাইবার বা সুতার পৃষ্ঠদেশ অধিক মসৃণ এবং সুষম হয় বলে প্রতিফলিত আলো অধিক সমভাবে বিচ্ছুরিত হয়। যার ফলে সুতা বা কাপড়ের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। 
  • মার্সেরাইজিং করা সুতা বা কাপড়ের গুণগত মান বৃদ্ধি পায়। 
  • মার্সেরাইজেশনের ফলে কাপড়ের মসৃণতা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ক্রেতা সাধারণের নিকট আর্কষণ বৃদ্ধি পায়। 
  • মার্সেরাইজিং এর ফলে অধিক আর্দ্রতা ও শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 

মার্সেরাইজিং এর অসুবিধা?

  • মার্সেরাইজিং এর ফলে টেক্সটাইল দ্রব্য সুতা ও কাপড় সংকুচিত হয়। যার ফলে টেক্সটাইল দ্রব্যের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হ্রাস পায়।
  • তাপমাত্রা (১৫°-২০° সে.) এর বেশি হলে মার্সেরাইজেশনের হার কম হয়।
  • মার্সেরাইজিং প্রক্রিয়াকালীন টেনশন সঠিক না হলে টেনশন ছাড়া মার্সেরাইজেশন করলে টেক্সটাইল দ্রব্যের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় না।
  • দূর্বল অ্যালকালি দ্বারা মার্সেরাইজ করা হলে সুতা ও কাপড়ে অসম ডাইং হয়।
  • মার্সেরাইজিং বেশি সময় ২ মিনিটের বেশি ধরে করলে অক্সিসেলুলোজ তৈরি হয়, যা দ্রব্যকে ক্ষতি করে।
Textile BD

Founder and Editor of Textile BD. He is a Textile Blogger & Entrepreneur. He is working as a textile job in Bangladeshi companies.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন