শ্রম কাকে বলে?
উৎপাদন কাজে নিয়োজিত কর্মপ্রচেষ্টাকে শ্রম বলে। শ্রম শারীরিক ও মানসিক উভয় রকমের হতে পারে। দেহ ও মনকে সমবেতভাবে যদি অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে চালনা করা হয় তাহলে তাকে শ্রম বলে বিবেচিত করা হয়। তাছাড়া কারিগরি বা প্রকৌশলী পারিশ্রমিকের বিনিময়ে যে পরিশ্রম করে থাকে তা অবশ্যই শ্রম।শ্রম |
কোন ক্রিয়াকর্ম যদি অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত না হয় তবে তা শ্রম হিসাবে গৃহীত হবে না। প্রকৌশলীর সেবামূলক কাজ, ভালোবাসার উদ্দেশ্যে পরিশ্রম, সৌখিন কাজকর্ম, যা অর্থনৈতিক অনুপ্রাণিত নয় তাকে শ্রম বলা যায় না।
একজন কাঠমিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, তাঁতি, মাঝি, ড্রাইভার, ওয়েল্ডার প্রমুখ পেশাগত ব্যক্তিবর্গের কর্মপ্রচেষ্টা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অনুপ্রাণিত বলে তা প্রকৃত অর্থে শ্রম বলে বিবেচিত হবে।
শ্রম কত প্রকার ও কি কি?
শ্রম দুই প্রকারঃ
- প্রত্যক্ষ শ্রম
- পরোক্ষ শ্রম
প্রত্যক্ষ শ্রম কি?
কোন দ্রব্য উৎপাদন করতে সরাসরি যে শ্রম জড়িত থাকে তাকে প্রত্যক্ষ শ্রম বলা হয়। যেমনঃ কাপড় বয়নের মজুরি ও আসবাবপত্র তৈরির মিস্ত্রি খরচ ইত্যাদি।
পরোক্ষ শ্রম কি?
কোন দ্রব্য উৎপাদন করতে সরাসরি যে শ্রম জড়িত থাকে না তাকে পরোক্ষ শ্রম বলা হয়।
শ্রমের ধারণা?
মানুষ যে কাজ করে তাই শ্রম। এ শ্রম কায়িক ও মানসিক উভয় প্রকারের হতে পারে। তবে শ্রমের শর্ত হচ্ছে শ্রমের উদ্দেশ্য থাকবে এবং শ্রমের বিনিময় থাকবে। উদ্দেশ্যহীন ও মজুরিহীন কাজ শ্রম নয়। অর্থাৎ শুধু আনন্দলাভের উদ্দেশ্যে কোন পরিশ্রম করলে অর্থশাস্ত্রের ভাষায় সেটি শ্রম বলে বিবেচিত হবে না। উৎপাদন কাজে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তির ব্যবহারকে শ্রম বলে।কেউ যদি আনন্দের জন্য গান গায়, অভিনয় করে কিংবা নৌকা বায় তার এই পরিশ্রমকে শ্রম বলা যাবে না। যে গায়ক পারিশ্রমিকের জন্য গান গায়, যে শিল্পী অর্থোপার্জনের জন্য অভিনয় করে কিংবা যে মাঝি মজুরির জন্য নৌকা বায়, তারা সকলেই শ্রমিক। অর্থ শাস্ত্র মতে, শ্রম উৎপাদনের অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান। শ্রম দ্বারা মানুষ প্রকৃতি হতে নানাবিধ উপকরণ সংগ্রহ করে অভাব পূরণের উপযোগী করে নেয়।
শ্রমের বৈশিষ্ট্য?
শ্রম হল উৎপাদনের অপরিহার্য একটি উপাদান। শ্রমের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে। নিচে শ্রমের সাতটি বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলঃ- শ্রম একটি জীবন্ত উপাদান
- শ্রমিক উৎপাদনের সাথে সরাসরি জড়িত
- শ্রমিক ও শ্রম অবিচ্ছেদ্য
- শ্রম স্থানান্তরযোগ্য
- শ্রমের যোগান পরিবর্তনশীল
- নশ্বর শ্রমশক্তি মূল্যহীন
- শ্রম অবিনশ্বর নয়