কারখানার স্থান নির্বাচনের জন্য বিবেচ্য বিষয়সমূহ?

যেকোন ধরনের কারখানা হোক না কেন তা নির্বাচন করার জন্য সঠিক স্থানের প্রয়োজন হয়। যদি কোন কারখানা সঠিক স্থানে স্থাপিত না হয়। 

কারখানা
কারখানা 

তাহলে ভবিষ্যতে সে কারখানাকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হবে। বরং কারখানা দেওয়ার পূর্বেই এই দিকগুলোকে ভালভাবে যাচাই বাছাই করে নেওয়া উচিত যেমনঃ
  • জমির দর
  • বাজারের কাছাকাছি
  • কাঁচামালের সুবিধা
  • শ্রমিক নিয়োগের সুবিধা
  • পরিবহনের সুবিধা
  • রাজনৈতিক অবস্থা
  • বিদ্যুতের সুবিধা
  • পানির সুবিধা
  • ব্যাংকিং সুবিধা
  • আবহাওয়া
  • জনকল্যাণ মূলক প্রতিষ্ঠান
  • আবাসিক সুবিধা
  •  স্থানীয় টেক্স

জমির দরঃ

একটি কারখানা নির্বাচনের জন্য জমির দর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারখানা ছোট কিংবা বড় তৈরি করার জন্য জমি অবশ্যই প্রয়োজন। তাই জমির দর দামের ব্যাপারে একটু সাবধানতা অবলম্বন করাই ভাল। শহর অপেক্ষায় শহরের আশেপাশে যে গ্রামগুলো থাকে। তাতে জমির দাম অনেক কম থাকে। তাই সেখানে শিল্প কারখানা বেশি গড়ে ওঠে।

বাজারের কাছাকাছিঃ

স্থান নির্বাচন করার সময় বাজারের দিকে খুব ভাল ভাবে দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ হল পণ্য তৈরি করার পরও বাজারে ছাড়তে হবে। তাই যদি কারখানার আশেপাশে বাজার থাকে। তাহলে আর কোন ধরনের চিন্তাই নেই।

কাঁচামালের সুবিধাঃ

যে স্থানে কাঁচামাল খুব সহজেই পাওয়া যায়। সে স্থানে কারখানা নির্বাচন করা উচিত। যেকোন কারখানার জন্যই তো কাঁচামাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ  কাঁচামাল যেখান থেকে খুব সহজে সংগ্রহ করা যায়। ঠিক তার আশে পাশেই কারখানা তৈরি করলে ভাল হয়।

শ্রমিক নিয়োগের সুবিধাঃ

কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থা সঠিক রাখার জন্য শ্রমিাদের গুরুত্ব অপরিসীম। শ্রমিক ছাড়া কারখানা কখনো কল্পনাই করা যায় না। তাই যেখানে শ্রমিক খুব সহজেই পাওয়া যায়। সেখানে কারখানা গড়ে তোলা উচিত।

পরিবহন এর সুবিধাঃ

কারখানা স্থাপনের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা বা যোগাযোগব্যবস্থা এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি খারাপ থাকে। তাহলে যোগাযোগে ব্যাঘাত ঘটে। সুতরাং স্থান নির্বাচন করার পূর্বে যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর খুব ভালভাবে দৃষ্টি রাখতে হবে।

রাজনৈতিক অবস্থাঃ

রাজনৈতিক অবস্থা বলতে অনেক সময় কারখানা দেওয়ার আগে অনুমতির প্রয়োজন হয়। সরকার বিভাগ সাধারণত এই অনুমতি দিয়ে থাকে।

বিদ্যুতের সুবিধাঃ

একটি কারখানা পরিচালনার জন্য বিদ্যুতের সুবিধার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তাই যেখানে খুব সহজেই বিদ্যুৎ পাওয়া যায়  সেখানে কারখানার স্থান নির্বাচন করা জরুরি।

পানির সুবিধাঃ

বিশেষ করে কিছু কিছু কারখানা পরিচালনা করার জন্য অনেক বেশি পরিমাণে পানি প্রয়োজন হয়। আর যেখানে পানির সুবিধা রয়েছে। অথবা পানি খুব সহজলভ্য সেখানেই কারখানার স্থান নির্বাচন করা উচিত।

ব্যাংকিং সুবিধাঃ

ব্যাংকিং সুবিধাকে কারখানা নির্বাচনের স্থানের বিবেচ্য বিষয় সমূহের উপর আনতে হয়। কারণ হল ব্যাংক কাছাকাছি থাকলে বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করা যায়।

আবহাওয়াঃ

বিভিন্ন কারখানার জন্য বিভিন্ন আবহাওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই কারখানার পরিস্থিতি বুঝে আবহাওয়া সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী।

জনকল্যাণ মূলক প্রতিষ্ঠানঃ

জনগণ মূলক প্রতিষ্ঠান যেমনঃ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি ইত্যাদি কারখানা স্থান নির্বাচনের বিষয় সমূহের মধ্যে আনতে হবে।

আবাসিক সুবিধাঃ

আবাসিক সুবিধা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। শ্রমিকরা যাতে সহজে কম ভাড়ায় থাকতে পারে তা দেখতে হবে।

সরকারি টেক্সঃ

সরকারি টেক্স সাধারণত স্থান বিশেষে হয়। আর কারখানা বিশেষ এর উপর ভিত্তি করে টেক্স নেওয়া হয়। তাই টেক্সের ব্যাপারটাও নজরে এনে কারখানা করা উচিত। তবে যদি সমস্ত সুবিধা ভালভাবে পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে শুধু ট্যাক্স এর ব্যাপারটা তখন এতটা ম্যাটার করে না।

পরিশেষে বলা যায় উপরের সবগুলো দিকে একসাথে বিবেচনা করা সম্ভব হয় না। কিন্তু যে দিকগুলো বিবেচনা না করলেই নয় সেই গুলোর প্রতি খুব ভালোভাবে দৃষ্টি রেখে সামনে এগিয়ে চলবেন। আশা করি অনেক সুবিধা পাবেন।
Next Post Previous Post