QA কি | QC কি | কোয়ালিটি কন্ট্রোল এবং কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স এর মধ্যে পার্থক্য

QA এর পূর্ণরুপ?
QA এর পূর্ণরুপ হল Quality assurance (QA)।

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স কি?

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স হল উৎপাদিত পণ্যের ভূল ত্রুটি প্রতিরোধ করার একটি পদ্ধতি। সাধারণত পণ্য বা সেবা কোন প্রকার ত্রুটি ছাড়া বায়ারের নিকট পৌঁছে দেওয়া। 

আই এস ও ৯০০০ এর সংজ্ঞা  মতে এটি হচ্ছে কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের একটি অংশ। যার মাধ্যমে পণ্য বা সেবা উৎপাদনের সময় তার কোয়ালিটির শর্তসমুহ পূরণ করা হয়েছে মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়ে থাকে।

মোটকথা ইহা উৎপাদিত পণ্য ও সেবা সম্পর্কিত একটি পজিটিভ ঘোষণা যা কাস্টমারের মনে আস্থা তৈরিতে সহায়তা করে। আর এই ঘোষণার মূল বিষয়বস্তু হল তৈরিকৃত পণ্য বা সেবা ভালভাবে কাজ করবে।

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স
কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স কিভাবে করা হয়?

যদিও কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সের এক্ষত্রে অনেকগুলো ধাপ রয়েছে। তবে তার মধ্যে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করা যেতে পারেঃ
  • প্রতিষ্ঠানের লক্ষ ও উদ্দেশ্য ঠিক করা।
  • কর্মরত জনবলের চাকুরী ডেসক্রিপশন সঠিকভাবে তৈরি করা যাতে তা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে অনেক সহায়ক হয়। তাদের কোম্পানির মিশণ ও ভিশন সম্পর্কেও পরিস্কার ধারণা থাকতে হবে। এজন্য তাদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স কি কি বিষয়ে সফলতা নিয়ে আসে তা চিহ্নিত করা?

যে সকল ফ্যাক্টর বা বিষয় কোম্পানির কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স পদ্ধতি সফল করতে পারে তা সনাক্ত করতে হবে। আর এই ফ্যাক্টরসমুহ হতে পারে একটি পরিকল্পিত উৎপাদন পদ্ধতি, কারিগরি সহায়তা, কোম্পানির উপর জনবলের আস্থা ও সন্তুষ্টি, কাস্টোমার সাপোর্ট, আর্থিক নিরাপত্তা ইত্যাদি। 

আর এজন্য প্রাথমিক পর্যায়ে কি কি ফ্যাক্টর কোম্পানির কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সিস্টেমকে প্রভাবিত করতে পারে। তার একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। এরপর সে অনুযায়ি কাজ করতে হবে।

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স অভ্যন্তরীন ও বাহ্যিক কাস্টোমার চিহ্নিত করার উপায়?

কাস্টোমারের একটি প্রধান গ্রুপ তৈরি করা উচিত। যার মাধ্যমে বুঝা যাবে যে কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করছে কি না। 

তবে আপনি যদি আপনার কাস্টমারকে জানতে পারেন এবং তার চাহিদা বুঝতে পারেন। তাহলে আপনি তাদের প্রয়োজন পূরণ হতে পারে এমন পণ্য বা সেবা তৈরির পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী হতে পারেন। 

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স মেনে কাস্টোমারের প্রতিক্রিয়া বা ফিডব্যাক কি কি হবে?

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সের ব্যাপারে কাস্টমারের ফিডব্যাক খুবই গুরত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এর মাধ্যমে কোম্পানি তার পণ্য বা সেবার ভাল ও মন্দ খুটিনাটি বিষয়াদি জানার সুযোগ পাবে। ফলে পরে পণ্য বা সেবার গ্রহনযোগ্য মান বজায় রাখার স্বার্থে তা যথাযথ সমাধানের ব্যবস্থা নিবে। 

এছাড়া নিয়মিত জরিপের মাধ্যমে কাস্টমার ফিডব্যাক পাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া কোন কাস্টমার পণ্য ক্রয়ের পার তাকে সরাসরি ফোন করে খবর নেওয়া যায়। আর কাস্টমারের অভিযোগ ও ফেরত পণ্যের তথ্য রিভিউ করে কাস্টোমার সেটিসফেকশণ মনিটর করা যায়।

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স এর মাধ্যমে বিরতিহীনভাবে পণ্য বা সেবার মান উন্নয়ন করা?

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সকে পণ্য বা সেবার চলমান উন্নয়নের একটি প্রক্রিয়াও বলা হয়ে থাকে। তাই এরা একে অপরের প্রতিশব্দ হিসাবে বিবেচিত হয়। অতএব কাস্টমার ফিডব্যাক বা প্রতিক্রিয়ার ফলাফলসমুহ পর্যালোচনা করে পরবর্তিতে সে সমস্যার সমাধান করা ও গুনগত মান আরোও বৃ্দ্ধি করার জন্য অবিরামভাবে চলমান থাকে।

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সের কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট সফ্টওয়্যার?
একটি ভাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সের সফ্টওয়্যার নির্বাচন করুন যা শুধুমাত্র যে কোয়ালিটি অ্যাসুউরেন্স প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে সহায়তা করবে ঠিক তা নয়। বরং এই প্রক্রিয়াকে আরোও উন্নতি করতে সহায়তা করবে।

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সের ফলাফল পরিমাপ করা?

কোম্পানির উৎপাদিত পণ্য ও সেবার কোয়ালিটি অ্যাসুউরেন্সের ফলাফল পরিমাপ করে পরবর্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে।
কোয়ালিটি কন্ট্রোল
কোয়ালিটি কন্ট্রোল

QC এর পূর্ণরুপ?

QC এর পূর্ণরুপ হল Quality control (QC)।

কোয়ালিটি মানে কি?

কোয়ালিটি মানে হল পণ্যের গুনগত মান যাচাই। 

কোয়ালিটি কি?

পণ্যের গুনগত মান যাচাই করাই হল কোয়ালিটি। 

কোয়ালিটি কাকে বলে?

বায়ারের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের গুনগত মান ঠিক রাখাকে কোয়ালিটি বলে।

কোয়ালিটি কন্ট্রোল এবং কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স এর মধ্যে পার্থক্য?

কোয়ালিটি কন্ট্রোলঃ

  • কোয়ালিটি হল কতগুলো কার্যক্রমের সমষ্টি যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পণ্য বা সেবার কোয়ালিটি তার মানদন্ড বা স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী উৎপাদিত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।
  • এর সিস্টেমের লক্ষ্য হল পণ্য বা সেবা উৎপাদনের পর বাজারে ছাড়ার আগে এই মধ্যবর্তি সময়ের মধ্যে উৎপাদিত পণ্য বা সেবার কোন ত্রুটি ও বিচ্যুতি রয়েছে কিনা তা চিহ্নিত করা।
  • ইহা উৎপাদিত পণ্যের ত্রুটি ও বিচ্যুতি বের করে ও সংশোধণ করে। তাই এজন্য একে reactive process বলা হয়।
  • এ পদ্ধতিতে পণ্য বা সেবার মানের উপর কোন সমস্যা দেখা দিলে তার উৎস খুঁজে বের করে সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় যাতে কাস্টমারের চাহিদা ভালভাবে পূরণ করা যায়।
  • উৎপাদিত পণ্য বা সেবার ত্রুটি ও বিচ্যুতি পরীক্ষা করার জন্য কোম্পানির পক্ষে বিশেষ এক টিম থাকে যার সদস্যগণ এর দায়ভার বহন করে থাকে।
  • এ পদ্ধতিতে পণ্য বা সেবার গুনগত মান ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম ও কৌশল প্রয়োগ করা হয়। 
  • এ পদ্ধতি হল corrective টুল।
  • ইহা হল প্রোডাক্ট অরিয়েন্টেড সিস্টেম। 
  • Validaation পদ্ধতি হল QC কার্যক্রমের একটি উদাহারণ।

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সঃ

  • ইহা এমন এক পদ্ধতি যার মাধ্যমে পণ্য বা সেবার যে কোয়ালিটি চাওয়া হয় তা অর্জন করা হয়েছে মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়।
  • এ পদ্ধতির মূল লক্ষ্য হল পণ্য বা সেবা উৎপাদন পদ্ধতি ও তার পরীক্ষা পদ্ধতির উন্নতি সাধন করা। যাতে করে উৎপাদিত পণ্যে কোন ধরনের ত্রুটি দেখা দিতে না পারে।
  • যে পদ্ধতির মাধ্যমে পণ্য বা সেবা তৈরি করা হয়েছে তাকে কেন্দ্র করা হয় ও এর মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য বা সেবার ভূল-ত্রুটি প্রতিরোধ করা। এজন্য একে proactive process বলা হয়ে থাকে।
  • এটি হল ভাল মানের একটি কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। যার মুল্যায়ন পদ্ধতিও তৈরি করা হয়। যা সময়ে সময়ে অডিট করা হয়ে থাকে।
  • পণ্য বা সেবা উৎপাদনে নিয়োজিত প্রত্যেকের দায়ভার বহন করতে হবে।
  • পরিকল্পিত ও ধারাবাহিক কার্যক্রম ও ডকুমেন্টেশনের আওতায় পণ্য বা সেবার কোয়ালিটি বিষয়ক সমস্যা প্রতিরোধ করা হয় এ পদ্ধতির মাধ্যমে। 
  • এ পদ্ধতি হল একটি ম্যানেজারিয়াল টুল।
  • ইহা হল প্রসেস অরিয়েন্টেড হয়।
  • Verification পদ্ধতি হল QA কার্যক্রমের একটি উদাহারণ।
Next Post Previous Post