তাঁত শিল্পের ইতিহাস?

প্রথম কখন বয়ন শুরু হয়েছিল তার সঠিক দিন তারিখ জানা নেই। তবে ধারণা করা হয় মিশরীয় সভ্যতা বিকাশের মাধ্যমে বয়নের সূত্রপাত হয়েছিল। মিশরে প্রথম নেট আবিষ্কার হয় খ্রিস্টপূর্ব ৭০০০ বছর পূর্বে। খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ সালে সিল্কের প্রচলন ছিল। 

উইভিং
উইভিং
আদিকালে এদেশে এমনকি ইউরোপেও তাঁতিরা দক্তিবিহীন তাঁতে মাকু হাতে ছুঁড়ে এক অদ্ভুত উপায়ে কাপড় বুনত। আর সেই সময় ফ্লাই সাটেল বা অন্য কোন প্রকারের উন্নত প্রযুক্তির তাঁত এদেশে ছিল না। ১৭৩৩ খ্রিস্টাব্দে জনকি নামক একজন ইউরোপীয় দক্তি এবং তার দুই পার্শ্বে দুটি বাক্স প্রস্তুত করেন। 

তিনি এতে মেড়া (Picker) বসিয়ে একটি হাতল ও দক্তির সাহায্যে এক বাক্স হতে অন্য বাক্সে খুব দ্রুত বেগে মাকু চলাচলের কৌশল আবিষ্কার করেন ফলে। তাঁতিগণ প্রাচীন তাঁত অপেক্ষা যথেষ্ট দ্রুত গতিতে বুনতে শিখল। ফলে তাঁতিগণ প্রাচীন তাঁত অপেক্ষা যথেষ্ট দ্রুত গতিতে বুনতে শিখল। ফলে হাতের ঠেলার পরিবর্তে পিকারের ব্যবহার শুরু হল।

যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হয়। মানুষ বৃদ্ধির সাথে সাথে উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজন দেখা দিল। তাঁতের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য টানা সুতাকে দুই ভাগে ভাগ করে সেড তৈরি করে কাঠির মাধ্যমে পড়েন সূতাকে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিক্ষেপ করে কাপড় তৈরি করত। এ পদ্ধতিকে Pit loom with through shuttle বলে। 

তাঁতী গর্তে বসে এই পদ্ধতিতে কাপড় বুনত বলে এটাকে গর্ত তাঁত বলে। এটাতে তাঁতি মাকুকে হাতের সাহায্যে নিক্ষেপ করত। অতি মিহি কাপড় যেমনঃ মসলিন, জামদানি, বেনারসি ইত্যাদি কাপড় গর্ত তাঁতে তৈরি হতো। বর্তমানেও আমাদের দেশেও ভারতে এই তাঁতে কাপড় বোনা হয়। 

জনৈক ডেনিশ ভারতীয় শ্রীরামপুরে উক্ত নবোন্নেত পদ্ধতির একখানা তাঁত নিয়ে নিয়ে সেখানে আসেন এবং একমাত্র সেই তাঁত অনুকরণ করে শ্রীরামপুরের তন্তুবারদের মধ্যে সর্বপ্রথম এই তাঁতের প্রচলন শুরু হয়। অতঃপর শ্রীরামপুর হতে ধীরে ধীরে এই তাঁত বাংলার সর্বত্র বিস্তৃতি লাভ করে যাকে শ্রীরামপুরী ফ্লাই সাটেল তাঁত বা ঠকঠকি তাঁত বলা হয়। 
Next Post Previous Post