চেক কি?
চেক হল ব্যাংকের প্রতি আমানতকারী কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি শর্তহীন লিখিত আদেশনামা। এতে গ্রাহককে অথবা কোন নিদিষ্ট ব্যক্তিকে অথবা তার নির্দেশে অন্য কোন ব্যক্তিকে চাহিদামাত্র একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদানের নির্দেশ থাকে।
চেক কত প্রকার ও কি কি?
চেক দুই প্রকারঃ- বাহক চেক
- হুকুম চেক
- বাহক চেক
- হুকুম চেক
- দাগকাটা চেক
তবে উপরের এ তিন প্রকার চেক ছাড়াও গ্রাহকদের লেনদেন কাজের সুবিধার্থে ব্যাংক আর বহু রকমের চেকের প্রচলন করে থাকে যেমনঃ
- বাহক চেক
- হুকুম চেক
- অন্যান্য চেক
বাহক চেক ও হুকুম চেক কি কি?
- দাগকাটা চেক
- সাধারণ দাগকাটা চেক
- বিশেষ দাগকাটা চেক
অন্যান্য চেক কি কি?
- ভ্রমনকারীর চেক
- উপহার চেক
- ফাঁকা চেক
- খোলা চেক
- মার্কেট চেক
- প্রত্যায়িত চেক
- পূর্ব তারিখের চেক
- পরবর্তী তারিখের চেক
- বাসি চেক
- চুরি করা চেক
- হারানো চেক ইত্যাদি।
বাহক চেক কি?
চেকের ধারক বা বাহক অথবা যে কোন ব্যক্তি ব্যাংকে উপস্থাপনের মাধ্যমে যে চেকের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করতে পারে তাকে বাহক চেক বলে। সাধারণত বাহক চেকে প্রাপকের নামের জন্য নির্দিষ্ট স্থানের পরে অথবা বাহকে কথাটি লেখা থাকে।এ ধরনের চেক কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই হস্তান্তর করা যায় এবং যে কোন ব্যক্তি এই চেক ব্যাংকে জমা দিলে ব্যাংক তাকে টাকা দিতে বাধ্য থাকে।
হুকুম চেক কি?
যে চেকের মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি অথবা তার আদেশ অনুসারে অন্য কোন ব্যক্তিকে প্রদানের জন্য ব্যাংকের প্রতি আদেশ জারি করা হয় তাকে হুকুম চেক বলে। এ প্রকার চেকে প্রাপকের নামের জন্য নির্দিষ্ট স্থানের পরে অথবা আদেশ অনুসারে কথাটি লেখা থাকে।আর এ চেকে হুকুম অনুমোদনের মাধ্যমে হস্তান্তর করতে হয়। তাই এধরণের চেকের অর্থ প্রাপক বা অনুমোদন বলে প্রাপক ছাড়া অন্য কেউ ব্যাংক থেকে গ্রহণ করতে পারে না।
দাগকাটা চেক কি?
যে চেকের উপরিভাগের বাম কোনায় আড়াআড়িভাবে দুটি সমান্তরাল রেখা টানা হয় তাকে দাগ কাটা চেক বলে। বাহক চেক অথবা হুকুম চেকে এধরণের রেখা টেনে দাগকাটা চেক তৈরি করা হয়।এ চেকের অর্থ সরাসরি ব্যাংক হতে সংগ্রহ করা যায় না, তবে ব্যাংকে চেক জমা দিয়ে হিসাবের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হয়। দাগকাটা চেককে দুভাগে তাকে ভাগ করা যায়ঃ
- সাধারণ দাগকাটা চেক
- বিশেষ দাগকাটা চেক
সাধারণ দাগকাটা চেক কি?
যে দাগকাটা চেকের সমান্তরাল রেখা দুটির মধ্যে কিছু লেখা থাকে না বা লেখা থাকলেও কোন ব্যাংকের নাম উল্লেখ থাকে না তাকে সাধারণ দাগকাটা চেক বলে। যেকোন ব্যাংক হিসাবে এ ধরনের চেক জমা দিয়ে অর্থ সংগ্রহ করা যায়।বিশেষ দাগকাটা চেক কি?
যে দাগকাটা চেকের সমান্তরাল রেখা দুটির মধ্যে কোন ব্যাংকের নাম উল্লেখ করা হয় তাকে বিশেষ দাগকাটা চেক বলে। এ ধরনের চেকের অর্থ দাগের ভেতরে যে ব্যাংকের নাম উল্লেখ থাকে কেবলমাত্র সেই ব্যাংকের হিসাবে জমা দিয়ে সংগ্রহ করা যায়।ভ্রমনকারীর চেক কি?
ব্যাংক ভ্রমণকারীদের সুবিধার্থে এক বিশেষ ধরনের চেক ইস্যু করে যাকে ভ্রমণকারী চেক বলে। সাধারণত ভ্রমণকারীরা দেশের বাইরে গিয়ে এ চেকের মাধ্যমে ইস্যুকারী ব্যাংকের শাখা বা প্রতিনিধি ব্যাংকের নিকট হতে অর্থ সংগ্রহ করতে পারে।উপহার চেক কি?
যে চেক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে প্রদান করা যায় তাকে উপহার চেক বলে। এধরণের চেক অনেকটা প্রাইজবন্ডের মত। এ জাতীয় চেকের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে সুদ পাওয়া যায়।অন্যদিকে বিভিন্ন আকর্ষণীয় পুরষ্কার পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশের কিছু কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক এ জাতীয় চেক ইস্যু করে থাকে। এ চেক যেকোন সময় ইস্যুকারী ব্যাংকের শাখায় ভাঙ্গাতে পারে।
ফাঁকা চেক কি?
যে চেকে সবকিছু যথাযথভাবে পূরণ করা হলেও টাকার অংকের ঘর খালি রেখে আদেষ্টা বা প্রস্তুতকারক স্বাক্ষর প্রদান করে তাকে ফাঁকা চেক বা নিরষ্ক চেক বলে। এক্ষেত্রে প্রাপক নিজে টাকার অংক লিখে তা ব্যাংক থেকে ভাঙ্গিয়ে থাকে।১৮৮১ সালে হস্তান্তরযোগ্য দলিল বলা হয়েছে, নিরষ্ক চেক হল এমন একটি চেক যাতে প্রস্তুতকারকের স্বাক্ষর থাকে, টাকার পরিমাণ বা প্রাপকের নাম উল্লেখ থাকে না। প্রাপক তার সুবিধামত টাকার অংক বসিয়ে নেয়। তবে প্রস্তুতকারক ইচ্ছে করলে টাকার সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দিতে পারেন।
মার্কেট চেক কি?
যে চেকের সাহায্যে বাজার হতে দ্রব্যসামগ্রী কেনাকাটা করা যায় তাকে মার্কেট চেক বা বাজার চেক বলে। যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য প্রভৃতি উন্নত দেশে এ জাতীয় চেকের প্রচলন দেখা যায়।তবে বাংলাদেশের কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক চেক কার্ড নামে এ ধরনের কার্ড সীমিত পরিসরে ইস্যু করে থাকে। যার দ্বারা নির্দিষ্ট বড় বড় দোকান থেকে নগদ অর্থের পরিবর্তে পণ্য সামগ্রী ক্রয় করা যায়।
খোলা চেক কি?
যে চেকে কারও নাম লেখা হয়না বা দাগকাটা হয় না তাকে খোলা চেক বলে। এ ধরনের চেক অবাধে হস্তান্তরযোগ্য এবং চেকের যেকোন ধারক একে আদেশ চেক বা দাগকাটা চেকে রুপান্তর করতে পারে।প্রত্যায়িত চেক কি?
যে চেক প্রস্তুতের পর উপস্থাপনের আগে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক বা ভারপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্তৃক প্রত্যায়িত হয় তাকে প্রত্যায়িত চেক বা অনুমোদনপ্রাপ্ত চেক বলে।সাধারণত প্রত্যায়নের মাধ্যমে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক সংশ্লিষ্ট চেকের অর্থ পরিশোধের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। তবে ব্যাংক অত্যন্ত স্বচ্ছল ও বিশ্বস্ত গ্রাহককে এ ধরনের চেক ইস্যু করে থাকে।
পূর্ব তারিখের চেক কি?
আদেষ্টা বা প্রস্তুতকারক যে তারিখে চেক ইস্যু করে থাকে, চেকে যদি উক্ত তারিখ না দিয়ে পূর্ববর্তী কোন তারিখ দেয়া হয় তাকে পূর্ব-তারিখের চেক বলে।যেমনঃ জানুয়ারি মাসের ২৬ তারিখের স্থলে ১৬ তারিখ লেখা হল। এক্ষেত্রে চেকে উল্লিখিত তারিখ ছয় মাসের মধ্যে হলে ব্যাংক চেকের টাকা প্রদান করে অন্যথায় নয়।
পরবর্তী তারিখের চেক কি?
আদেষ্টা বা প্রস্তুতকারক যে তারিখে চেক ইস্যু করে থাকে, চেকে যদি উক্ত তারিখ না দিয়ে পরবর্তী কোন তারিখ দেয়া হয় তাকে পর-তারিখের চেক বলে। এধরনের চেকের ক্ষেত্রে উল্লেখিত তারিখের পূর্বে থেকে টাকা উত্তোলন করা যায় না।চুরি করা চেক কি?
যদি কোন বৈধ চেক চুরি হয় অর্থাৎ চেক প্রস্তুতের পর ব্যাংকে উপস্থাপনের পূর্বে যদি কোন ব্যক্তি কারও নিকট হতে কোন চেক চুরি করে নিয়ে যায় তাকে চুরি করা চেক বলে।এক্ষেত্রে চেকের মালিকে অবশ্যই সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে চেক সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। অন্যথায় ব্যাংক এ চেকের টাকা পরিশোধ করলে এর জন্য ব্যাংকে একজন দায়ী করা যায় না।
বাসি চেক কি?
সাধারণত চেক ইস্যু করার দিন হতে পরবর্তী ছয় মাস পর্যন্ত চেকের মর্যাদা বলবৎ থাকে। উক্ত সময়ের মধ্যে চেক ব্যাংকে উপস্থাপন না করলে পরবর্তীতে চেকের টাকা ব্যাংক পরিশোধ করে না। আর এ জাতীয় চেককে বাসি চেক বা তামাদি চেক বলা হয়।অর্থাৎ যদি কোন চেক ০১-০১-২০২২ ইং তারিখে ইস্যু করা হয় তাহলে ৩০-০৬-২০২২ ইং তারিখে পর্যন্ত চেকটি বৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে ০১-০৭-২০২২ ইং তারিখ পর্যন্ত হতে চেকটি বাসি বা তামাদি চেক হিসাবে গণ্য হবে।
Nice
উত্তরমুছুন